Sunday 22 March 2020

করোনাভাইরাসঃ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্য একটি মোক্ষম জীবাণুঅস্ত্র


করোনাভাইরাস কি অন্য কোনও প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে ঢুকেছে নাকি জীবাণু অস্ত্রের ল্যাবরেটরি থেকে উদ্দেশ্যমূলক-ভাবে এটি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, এ নিয়ে বিতর্ক চলছে। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ইরান, রাশিয়া, ব্রিটেন এ বিষয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব  প্রচার করে চলেছে। অনেকের মতে এ ধরনের ষড়যন্ত্র তত্ত্ব শুধুই ভয়, গুজব এবং ঘৃণা ছড়াবে যাতে এই সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ব্যাহত হবে। কিন্তু, এসব ষড়যন্ত্র তত্ত্বকে অস্বীকার করতে গিয়ে আমরা একটা চরম সত্যকে উপেক্ষা করছি। আর তা হলে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি যেভাবেই হোক না কেনও এটা এখন চরম সত্য যে জীবাণু অস্ত্র হিসাবে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় গুনাবলি করোনাভাইরাসের মধ্যে বিদ্যমান। যেমন এটি একটি অতি সংক্রামক জীবাণু যা বিভিন্ন জৈবিক তরল যেমন লালাতে কয়েকদিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। এছাড়া করোনাভাইরাস জনিত রোগের সুপ্তিকাল দীর্ঘ।  তাই, বিশ্বনেতাদের জন্য করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে জনগণকে রক্ষা করার সাথে সাথে এটি নিশ্চিত করতে হবে যে এই করোনাভাইরাস যেন কোন ভাবেই কোনও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর জন্য একটি মোক্ষম জীবাণুঅস্ত্র হয়ে না ওঠে। বিশ্বনেতাদের এটা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করতে হবে যে বিশ্বের প্রতিটি দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রশাসন, চিকিৎসা, শিক্ষা, সামরিক বাহিনীসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বয়স্ক ব্যক্তিরা। আর করোনাভাইরাস জনিত রোগ Covid 19-এ মৃত্যুহার সবচেয়ে বেশি বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে। এর অর্থ হল সন্ত্রাসীদের কাছে যেসকল ব্যক্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, করোনাভাইরাস ব্যবহার করে তাদেরকে হত্যা করা ততো সহজ। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতারা সবচেয়ে বেশি ঝুকিতে আছে। তাই, করোনাভাইরাসের সন্ত্রাসী হামলা থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের রক্ষার উপায় নিয়ে বিশ্বনেতাদের করণীয় পদক্ষেপগুলো অতিদ্রুত নিতে হবে। তাঁদের মনে রাখতে হবে সন্ত্রাসীরা যেমন শরীরে বিস্ফোরক বহন করে আত্মঘাতী হতে পারে, তেমনি তারা স্বেচ্ছায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিজ দেহ থেকে প্রত্যাশিত ব্যাক্তির দেহে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। যেহেতু, এই করোনাভাইরাস জনিত রোগের সুপ্তিকাল ১৫ দিন পর্যন্ত হতে পারে, তাই আক্রান্ত ব্যাক্তির রোগের লক্ষন প্রকাশের পূর্বেই প্রচলিত সুরক্ষা ব্যবস্থার ধাপগুলো পার করে সন্ত্রাসীরা কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি বা অবস্থানে পৌছাতে পারবে। এছাড়া জীবাণু অস্ত্রের মাধ্যমে প্রত্যাশিত ব্যক্তিকে সংক্রমিত করার আরও অনেক উপায় রয়েছে যেসব উপায় সন্ত্রাসীরা ব্যবহার করতে পারে। যেমন, বিভিন্ন রাজনৈতিক, ধর্মীও, সামাজিক ও প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানে যে সকল উপকরণ নিয়মিত ব্যবহার হয় যেমন ফুলের মালা ও তোরা, মেডেল, মাইক্রোফোন ইত্যাদিকে সহজে ভাইরাস বহনকারী লালা দ্বারা সংক্রমিত করা। ফলে এসব উপকরণের সংস্পর্শে যেসকল ব্যক্তি আসবেন তারাই ভাইরাসটি দ্বারা সংক্রমিত হবেন। তাই, করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে সেই বিতর্ক ভুলে বিশ্বনেতাদের উচিত করোনাভাইরাস যেন সন্ত্রাসীদের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার না হয় তার জন্য সম্মিলিত প্রয়াস গ্রহন করা।       

ডঃ মোঃ ফজলুল হক

অণুজীব বিজ্ঞানী ও সহযোগী অধ্যাপক

প্রাণিবিদ্যা বিভাগ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী, বাংলাদেশ

No comments:

Post a Comment

Pageviews last month